top of page
Writer's pictureDipam Nath

করোনা আবহে শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন



পুরো বিশ্ব যখন করোনা নামক মহামারীর সাথে লড়াই করতে ব্যাস্ত তখন অনেকেই হয়তো তাদের শিশুদের এরূপ কঠিন সময়ে কিভাবে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সবল রাখবেন ভেবে পাচ্ছেন না। কি করা উচিৎ বা কি করা উচিৎ নয় এই নিয়ে মনে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকছে বহু অভিভাবক অভিভাবিকা দের। কোন্ কোন্ জিনিস গুলো মেনে চললে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ কে সুস্থ রাখা যাবে এরকম করোনা আবহেও আজ এই বিষয়েই কিছু আলোচনা করা যাক। সর্বপ্রথম আলোচ্য বিষয় হলো-

১. শিশুর পুষ্টি এবং সুষম আহার:-

আমাদের সবার প্রথমেই মাথায় রাখা উচিত শিশুর যাতে পুষ্টি ভালো হয়। তাদের সুষম আহারে কি কি জিনিস রাখা উচিত? সবুজ পাতা যুক্ত শাক সবজি, উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, বিভিন্ন ধরনের ডাল, দানা সস্য ইত্যাদি, ভিটামিন সি যুক্ত খাদ্যদ্রব্য যেমন আপেল, আনারস, কমলা লেবু, মুসম্বি লেবু ইত্যাদি। ভিটামিন সি তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ায়।

২. করোনার স্বাস্থ্যবিধি:-

শিশুরা যখন ঘরের বাইরে বেরোবে অথবা শিশুদের নিয়ে যখন বাইরে বেরোতে হবে তখন তাদের মুখে যেন অবশ্যই মাস্ক থাকে যা সার্জিক্যাল বা কাপড়ের মাস্কও হতে পারে কিন্তু মাস্ক ছাড়া শিশুদের বাইরে বেরোনো একেবারেই নিরাপদ নয় ঠিক প্রাপ্ত বয়স্কদের মতোই। সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে চলতেই হবে এবং শিশুরা যেন কোন ভিড় বা ব্যস্ত জায়গায় না যায় অথবা কোন অপরিচ্ছন্ন জায়গায় খেলাধুলা না করে সেই দিকেও নজর রাখতে হবে। বার বার হাত ধোয়া , স্যানিটাইজ করা, এবং মুখে চোখে কানে কোথাও যাতে বাচ্চারা হাত না লাগায় সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত।

৩. নির্দিষ্ট সময়ে শিশুদের ভ্যাকসিনেট করা:-

করোনা, লকডাউন ইত্যাদি বিভিন্ন বাধার কারণে বিগত বহু সময় ধরে অনেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের পূর্ব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন গুলি যেমন BCG, IPV, DTP, HEP-A, HEP-B, MMR ইত্যাদি দেওয়াতে নিয়ে যেতে পারছেন না কিন্তু এইরূপ অবহেলা করলে একদম চলবে না। কারণ এইগুলি শিশুদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। যথাসময়ে ভ্যাকসিনেট না করলে সেই রোগগুলো কিন্তু মারণ আকার ধারণ করতে পারে ছোট্ট অবহেলার জন্য।

৪. শিশুদের হসপিটাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে দেরি নয়:-

অনেকেই মনে করেন যে শিশুদের যদি হসপিটাল অথবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে তারা সুস্থ হওয়ার জায়গায় অন্যান্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে সেই কারণে অনেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানকে নিয়ে যেতে ভয় পান। কিন্তু এই দ্বিধা বোধ করা উচিত নয় কারণ বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং প্রত্যেকটি বিভাগকে আলাদা আলাদা করে দেওয়ার কারণে নির্দ্বিধায় সন্তানকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে নিরাপদেই। সামান্য থেকে সামান্যতম কোন রোগ হলেও শিশুকে সাথে সাথেই নিয়ে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নাহলে সেই ছোট্ট রোগ তাকে বড় কোনো রোগের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

৫. পোস্ট ইনফেকসাস মাল্টি সিস্টেম সিনড্রোম (PIMS):-

ইহা ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম বা পেডিয়াট্রিক ইনফেকসাস মাল্টি সিস্টেম সিনড্রোম বা পিমস নামেও পরিচিত। সাধারণত করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার ২-৪ সপ্তাহের মধ্যে অনেক শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তীব্র জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া, বুকে ব্যাথা, অল্পেই হাঁফিয়ে যাওয়া, বমি, গায়ে ব্যাথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেতে পারে শিশুর মধ্যে। এই রোগ একটি ইনফ্লেমেটরি রোগ যার কারণে শরীরের মধ্যে হার্ট, ফুসফুস, কিডনি ইত্যাদি ফুলে যেতে পারে যা মারণ আকারও ধারণ করতে পারে। আবার অনেক শিশু এই পিমস -এ আক্রান্ত হওয়া সত্বেও কোনো লক্ষণই দেখা যায় না , তাই যেসব শিশু করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠছে, তাদের যেন নিয়মিত হেলথ চেক আপ এর ব্যাবস্থা করা যায় সেটি নিয়ে তাদের অভিভাবকদের সচেতন থাকা উচিত।

৬. ইলেকট্রনিক গ্যাজেটে শিশুদের আসক্তি:-

লকডাউন এবং স্কুল বন্ধের মেয়াদ যত বাড়ছে শিশুদের মধ্যে ইলেকট্রনিক গ্যাজেট এর প্রতি আসক্তি ঠিক ততটাই বাড়ছে।

বর্তমানে সমস্ত ধরনের অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা ইত্যাদি সবকিছুই এখন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে ,যে কারণে দিনের বেশিরভাগ সময় শিশুদের হাতে বই অথবা খাবারের জায়গায় মোবাইল ফোন বা ট্যাবলেট দেখতে পাওয়া যায়। যেটা তাদের শরীরের সাথে সাথে মানসিক ক্ষতিও করছে। পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যাওয়া,খিদে কমে যাওয়া, খেলাধুলা তে অনীহা ইত্যাদি নানান ধরনের অসুবিধা শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে আরো বেশি করে এই মহামারীর সময়ে। সেই জন্য প্রত্যেক পিতামাতার উচিত তাদের সন্তানের শুধুমাত্র পড়াশোনার জন্য যেটুকু সময় দরকার ততটুকু সময় তাদের হাতে মোবাইল ফোন বা ট্যাবলেট দেওয়া যাতে তারা সেই গ্যাজেটের আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

৭.শিশুদের সৃষ্টিশীল ও উদ্ভাবনী কাজ করতে অনুপ্রাণিত করা:-

বেশিরভাগ শিশুরাই এখন মানসিক অবসাদে ভুগছে দীর্ঘদিন ধরে ঘরে একা থাকার জন্য। এই অবসাদ দূর করতে তাদেরকে নানা রকম সৃষ্টিশীল এবং উদ্ভাবনী কাজ যেমন ছবি আঁকা, গান গাওয়া, নাচ করা, গল্প - কবিতা লেখা, ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ,মার্শাল আর্টস ইত্যাদি বিষয়ে অনুপ্রাণিত করা উচিত প্রত্যেক পিতা-মাতার। এতে তাদের মানসিক বিকাশ এর পাশাপাশি শারীরিক উন্নতিও হয়।

সবশেষে বলা যায় শিশুদের সঠিক ভাবে খেয়াল রাখা অতি আবশ্যক কারণ তারাই পারবে এই পৃথিবীর এক সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করতে। এই কারণেই বলা হয়ে থাকে - "Children Are The Hands By Which We Take Hold Of Heaven."
228 views4 comments

4 則留言


訪客
2021年10月07日

Very Informative..!

按讚
Dipam Nath
Dipam Nath
2021年10月07日
回覆

Thank You.

按讚

訪客
2021年10月07日

Loved it congrats keep it up buddy proud to have a friend like you

按讚
Dipam Nath
Dipam Nath
2021年10月07日
回覆

Thank You So Much Brother♥️

按讚
  • Instagram
  • Facebook
  • LinkedIn
  • YouTube
bottom of page