হার্ট বা হৃৎপিণ্ড হলো শরীরের অন্যতম এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীরের বাকি সব অঙ্গের মধ্যে হার্ট নিয়েই চিন্তা আমাদের সব থেকে বেশি কারণ এর সামান্য থেকে সামান্যতম অসুবিধাও জীবনে নিয়ে আসতে পারে মহাবিপর্যয়। রোগের ক্ষেত্রে হার্ট কে নিয়েই সব থেকে বেশি ভয়। তাই আমাদের উচিত নিজেদের হার্টকে সুস্থ এবং সবল রাখা। শত শত বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এই বিষয়ে গবেষণা হয়ে চলছে। আজ এই বিষয়ে আলোকপাত করা যাক যে ঠিক কোন্ কোন্ জিনিস গুলি মেনে চললে হার্টকে ভালো রাখা সম্ভব।
হার্ট কে ভালো রাখার ২৫ টি টিপস :
১. প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট সাইকেল চালালে হৃদপিন্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
২. প্রতিবেলায় খাবারে অন্তত দুই চামচ দারচিনি খাওয়া হলে সেটা হার্টকে সতেজ রাখে।
৩. প্রতিদিন দুই গ্লাস করে গরুর দুধ খেলে সেটা রক্তের LDL কে কমাতে সাহায্য করে যা হার্টের জন্য লাভদায়ক।
৪.প্রতিদিন ২০ মিনিট করে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা রক্তচাপকে কমাতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে।
৫.হার্ট ভালো রাখতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন কিলোমিটার করে দৌড়ানো উচিৎ আমাদের।
৬.শিম, বরবটি শরীরের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এগুলো রাখলে খুবই ভালো।
৭.এনার্জি ড্রিংক বা শক্তিবর্ধক পানীয়কে ‘শত্রু’ হিসেবে গণ্য করা উচিত কারণ এসব পানীয় কোনোভাবেই উপকারে আসে না, বরং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
৮. কমলা বা সবুজ রঙের সবজি অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ থেকে হার্টকে রক্ষা করে।
৯. হাসি খুশি এবং প্রাণবন্ত থাকা উচিত কারণ এভাবে থাকলে এগুলি হার্টের অলিন্দ ও নিলয়ের প্রকোষ্ঠকে সুঠাম রাখতে সাহায্য করে।
১০.খাবার এর তালিকা তে সবুজ স্যালাড কে অবশ্যই রাখা উচিত হার্টকে সতেজ রাখতে।
১১.হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে গলা ছেড়ে গান গাইতেও উৎসাহিত করেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।
১২.প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণ আখরোট-জাতীয় ফল খেলে শরীরের সমস্ত রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া কার্যকর হয়ে ওঠে। কারণ আখরোট-জাতীয় ফলে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে তীব্র অবস্থান নেয় এবং এর ফলে শরীরের দূষিত রক্ত নিয়মিত পরিসঞ্চালিত হয়ে হার্টের গতিকে স্বাভাবিক রাখে।
১৩.বাতাসে থাকা অতিরিক্ত ধাতব পদার্থ নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে ধমনি প্রাচীরকে আরো পুরু করে তোলে, যে কারণে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়। তাই দূষিত বাতাস থেকে দূরত্ব মেনে চলা উচিত।
১৪.ডিমের কুসুমে থাকা ভিটামিন ই, বি-১২ এবং ফলেট করোনারি আর্টারিকে পরিষ্কার রাখে। তাই ডিম খাওয়া হার্টের পক্ষে উপকারী।
১৫.অবসাদ থেকে দূরে থাকা উচিত আমাদের। অবসাদ দূর করার তৎপরতা হৃদযন্ত্রের সংকট কাটায় প্রায় ৫৭%।
১৬.বাড়ির গৃহপালিত কুকুর-বিড়াল বা পাখিদের প্রতিও মনোযোগী হওয়া ভালো। পোষ্য প্রাণীদের প্রতি উদারতা হার্টের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
১৭.যেসব ব্যক্তিরা একা থাকেন তারা অন্যদের তুলনায় বেশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকে তাই সামাজিক যোগাযোগ বাড়ানো উচিৎ। মানুষের সাথে মেলামেশা, কথা বলা, আলাপ পরিচয় করলে মন ও হার্ট ভালো থাকে।
১৮.হার্টের সমস্যার সঙ্গে উচ্চ ডেসিবেল এর শব্দেরও বিশেষ যোগাযোগ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সাধারণ এর থেকে প্রতি ১০ ডেসিবেল শব্দের মাত্রা বাড়ার সাথে সাথে হার্ট অ্যাটাকের পরিমাণও বাড়তে থাকে ১২% হারে।
১৯.খাবারে মধ্যে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট বা চর্বি হৃৎপিণ্ডকে অকার্যকর করে তুলতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। সুতরাং খাদ্য তালিকা থেকে ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ কমানো উচিৎ।
২০.হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচ দিন করে রোজ ৩০ মিনিট ব্যায়ামের প্রয়োজন প্রাপ্তবয়স্কদের।
২১. ধূমপান ত্যাগ করা উচিত হার্টকে স্বাভাবিক রাখতে।
২২. মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ অ্যালকোহল সরাসরি স্বাভাবিক রক্তচাপকে বিঘ্নিত করে।
২৩.ইতিবাচক মনভাবাপন্ন মানুষ হয়ে উঠলে সেটা হার্টের জন্যে অতি উত্তম।
২৪.শারীরিক ও মানসিক চাপ কমানো উচিৎ হৃদপিন্ডকে সতেজ রাখতে।
২৫.ডায়াবেটিস রোগীদের এ্যাথারোস্ক্লেরোসিস বেশি হয়। ফলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। তাই রোগীদের অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
সর্বোপরি বলা যেতে পারে আমাদের সুস্থ থাকতে হলে হার্টকে সুস্থ রাখতে হবে সবার আগে কারণ হার্টের ছোট্ট কোনো অসুবিধাও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। কথায় আছে - "With A Healthy Heart. The Beat Goes On."
Informative
It's Really Very Informative. Thanks